পাতা
দেশে দারিদ্র নিরসনে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও ভিক্ষাবৃত্তির মতো অমর্যাদাকর পেশা থেকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর আবাসন, ভরন-পোষণ এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক কর্মসূচি হাতে নেয়। আগষ্ট ২০১০ খ্রিঃ থেকে এ কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়। এর মূল লক্ষ্য হল ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে আয়বর্ধ্বক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা। পরোক্ষভাবে ভিক্ষুকদের পরিবারকে সহায়তা প্রদান এবং সর্বোপরি সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন।
ঢাকা মহানগরের ১০ টি জোনে ১০ টি এনজিও’র মাধ্যমে ২০১১ সনে ০১ (এক) দিনে ১০,০০০ হাজার ভিক্ষুকের উপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। জরিপকৃত ভিক্ষুকদের তথ্য উপাত্ত নিয়ে একটি ডাটাবেইজ তৈরি করা হয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত ১০,০০০ জন ভিক্ষুক হতে ২০০০ জন ভিক্ষুককে নিজ নিজ জেলায় পুনর্বাসনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। দেশব্যাপী প্রসারের পূর্বে পদ্ধতিগত কার্যকারিতা র্নিভুল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলায় ৬৬ জন ভিক্ষুককে রিকশা, ভ্যান ও ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য পুজিঁ প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের নিমিত্ত পাইলট কর্মসূচি পরিচালনা করা হযেছে। বর্ণিত জেলা হতে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ জেলায় পুনর্বাসনকৃত (ঢাকায় পরিচালিত জরিপে প্রাপ্ত) ভিক্ষুকদের বেশির ভাগই রিকশা, ভ্যান বিক্রি করে পুনরায় ঢাকায় চলে এসেছে। তবে জামালপুর জেলায় পুনর্বাসনকৃত স্থানীয় ভিক্ষুকগণ রিকশা, ভ্যান ও সরবরাহকৃত পুজিঁ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে।
কর্মসূচির পাইলটিং পর্যায়ে পুনর্বাসন কার্যক্রমের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে সফলতা অর্জন ব্যতীত কর্মসূচির সফলতা অর্জন সম্ভব নয়। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহরের বিমানবন্দর এলাকা, হোটেল সোনারগাঁও, হোটেল রূপসী বাংলা, হোটেল রেডিসন, বেইলীরোড, কূটনৈতিক জোন ও দূতাবাস এলাকাসমূহকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে এসব এলাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ভিক্ষুকমুক্ত এলাকার আওতা আরও বৃদ্ধি করা হবে।
ভিক্ষুকমুক্ত হিসেবে ঘোষিত এলাকাসমূহে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রাপ্ত ভিক্ষুকদেরকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন তাদেরকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ এবং পুনর্বাসন করা হয়।
ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচির জন্য সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলায় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচির জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সমাজসেবা অধিদফতর হতে ৪ লক্ষ টাকা এবং বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ হতে ৭ লক্ষ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সমাজসেবা অধিদফতর হতে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জরিপ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জেলা ও উপজেলা কমিটির মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস